"নামাজের সুন্দর দৃশ্য দেখে ইসলাম গ্রহন"
“এক দুপুর বেলায় সূর্য যখন মধ্য গগণে শোভা পাচ্ছিল তখন বাগানের বা ফসলের ক্ষেতের করিডোর দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ কানে ভেসে এল একই তাল ও ছন্দের এক মধুর ধ্বনি। এগিয়ে গিয়ে দেখলাম এক অপূর্ব ও মনোহর দৃশ্য। সদ্য-স্থাপিত একটি কাঠের টাওয়ারের ওপর দাঁড়ানো এক মুসলমান উপহার দিচ্ছিলেন এই মধুর সুর। কানে আসছিল কতগুলো আরবি শব্দ। যেমন, আল্লাহু আকবার বা আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ লাইলাহা ইল্লাল্লাহ বা আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই ইত্যাদি। কি ঘটতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না।
ধীরে ধীরে আমার চারদিকে জড় হচ্ছিলেন নানা অঞ্চলের ও নানা বয়সের মানুষ। তারা অত্যন্ত প্রশান্ত চিত্তে ও সশ্রদ্ধ ভঙ্গিতে পরস্পরের পাশে দাঁড়ালেন। প্রত্যেকের হাতেই রয়েছে মাদুরের তৈরি একটি জায়নামায। তারা সেগুলোকে সবুজ ঘাসের ওপর বিছিয়ে দিচ্ছিলেন। ক্রমেই তাদের সংখ্যা বাড়ছিল। ঠিক কতজন শেষ পর্যন্ত এভাবে একসঙ্গে জড়ো হলেন তা বুঝতে পারিনি। তারা পায়ের জুতোগুলো খুলে কয়েকটি লম্বা ও সুশৃঙ্খল সারিতে দাঁড়িয়ে গেলেন। নীরবে দেখছিলাম এই দৃশ্য। বিস্মিত হচ্ছিলাম এটা দেখে যে সেখানে কারো ওপর অন্য কারো কোনো ধরণের অগ্রাধিকার ছিল না। তাদের মধ্যে কেউ ছিলেন শ্বেতাঙ্গ, কেউ কৃষ্ণাঙ্গ ও কেউবা হলুদ বা বাদামি বর্ণের।” বলছিলেন মার্কিন নও-মুসলিম ‘থমাস ক্লেয়টন’।
মার্কিন নও-মুসলিম ক্লেয়টন আরো বলেন: “এই সমাবেশে ভ্রাতৃত্বের যে চিত্র ও পরিবেশ দেখেছিলাম তার প্রভাব কখনও বিলুপ্ত হবে না। সেই থেকে অনেক বছর কেটে গেছে। আমি সেই বছরই ইসলামের ছায়াতালে আশ্রয় নেই এবং নিজের জন্য মুহাম্মাদ নাম বেছে নেই।”
মানবীয় প্রকৃতির ধর্ম ইসলাম মানুষকে প্রকৃত সৌভাগ্যের পথ দেখায় বলে অমুসলিম বিশ্বেও দিনকে দিন এ ধর্মের প্রতি বাড়ছে মানুষের আকর্ষণ। আধ্যাত্মিক শূন্যতার কারণে মানুষ এখন ধর্মের দিকে ফিরে যেতে চাইছে। আর ইসলামের মধ্যেই তারা পাচ্ছেন অবিকৃত ধর্ম ও প্রকৃত আধ্যাত্মিকতার স্বাদ এবং পরিপূর্ণ জীবন বিধান।
মুসলমানদের নামাযের জামায়াতে ফুটে উঠে এক আদর্শ সমাজ তথা ইসলামী সমাজের চিত্র যেখানে কোনো ভেদাভেদ নেই এবং সবাই একই দেহ ও একই হƒদয় নিয়ে একই লক্ষ্যে আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করেন। আর তাই এ ধরনের ইবাদতের দৃশ্য সত্য-সন্ধানী মানুষকে আকৃষ্ট করে ইসলামের দিকে; থমাস ক্লেয়টনের মত মার্কিন নাগরিক হচ্ছেন এমনই সৌভাগ্যবানদের একজন। প্রকৃত নামাযির মত কোনো সমাজের সদস্যরা যদি সব অবস্থায় আল্লাহকে হাজির নাজির জানেন তাহলে সেখানে অনৈতিক আচরণ, পাপাচার, দুর্নীতি ও অন্যায়ের কোনো সুযোগ থাকে না।
মার্কিন নও-মুসলিম ‘থমাস ক্লেয়টন’ আরো বলেছেন: “ইসলাম মানুষকে দায়িত্বশীলতা, কল্যাণকামীতা ও সততার মত পছন্দনীয় গুণের অধিকারী হতে বলে। এ ধর্ম অন্যের সম্পদ ও জীবনের ওপর জুলুম করতে নিষেধ করে এবং নিজের অধিকার রক্ষার কথা বলে। যেসব কাজ সমাজ ও নিজের জন্য কল্যাণকর তা করার এবং যেসব কাজ সমাজের জন্য ক্ষতি ও দুর্নীতি ডেকে আনে তা থেকে দূরে থাকার কথা বলে ইসলাম। নামাযের মত যেসব ইবাদত আল্লাহর দাসত্ব ও আনুগত্যের প্রতীক সেইসব ইবাদতে শামিল হতে বলে এই মহান ধর্ম।”
ইসলাম ছাড়া অন্যান্য বিধানে কেবল বস্তুগত চাহিদাকে অথবা কেবল আধ্যাত্মিক চাহিদাকেই গুরুত্ব দেয়া হয়। এই একদেশদর্শিতার কারণে রোমান সভ্যতাসহ অতীতের অনেক সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং পাশ্চাত্য এখনও সেই ধ্বংসের পথেই এগুচ্ছে বলে মনে করেন অ্যাশেপঙ্গলারের মত পশ্চিমা চিন্তাবিদরাও। কিন্তু ইসলাম এই উভয় চাহিদাকেও পর্যাপ্ত মাত্রায় গুরুত্ব দিয়েছে। তাই ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণে ইসলামের কোনো বিকল্প নেই।
মার্কিন নও-মুসলিম ‘থমাস ক্লেয়টন’ সবশেষে আরো বলেছেন:
“আমি এখন আল্লাহ ছাড়া কোনো মা’বুদ বা উপাস্য নেই- এই বাক্যে আন্তরিকভাবে বিশ্বাসী এবং এই সত্যকে আমার সমগ্র অস্তিত্ব দিয়ে অনুভব করছি। আমি এই ধর্মকে আমার প্রকৃতির ইচ্ছাগুলোর সঙ্গে মানানসই হিসেবে দেখতে পাচ্ছি। আর তাই মুসলমান হয়েছি। সেই থেকে এ পর্যন্ত আমার ¯্রষ্টার প্রতি এক বিশেষ ভালবাসা অনুভব করছি। যখন মুসলমান ছিলাম না তখন কেন এই অনুভূতি ছিল না তা জানি না। আল্লাহর ওপর আমার রয়েছে গভীর বিশ্বাস।
আশা করছি এই ঈমানকে সব সময় রক্ষা করতে পারব। যখন কেউ আল্লাহর ওপর ঈমান আনেন আল্লাহ তাকে নিরাশ করেন না; তিনি সব সময়ই বান্দার ডাকে সাড়া দেন। কখনও কখনও বান্দা হতাশ হয়ে পড়েন ও ভাবেন যে আল্লাহ তার ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে পরিত্যাগ করেছেন। আমি তাদেরকে বলতে চাই, কখনও দয়ালু আল্লাহ সম্পর্কে আশা ছাড়বেন না। আল্লাহ সব অবস্থায় আমাদের দেখছেন। সঠিক পথ নির্বাচনে ও ভালো কাজ করার ক্ষেত্রে সাফল্য দানে তিনিই আমাদের সহায়তা করবেন।
একমাত্র ঈমানই জীবনের সব ক্ষেত্রে মানুষকে সফল করে। নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতি আমাদের ভালবাসা একতরফা নয়। আমরা যেমন আল্লাহকে ভালবাসি, তেমনি আল্লাহও তাঁর বান্দাদের ভালবাসেন।
======================================
২.নামাযের মাধ্যমে গাঁট বা জোড়ার
ব্যথা আরোগ্য লাভ করে। ওযু করার পর
যখন আমরা নামাযের জন্যে দাঁড়াই তখন
দেহ ঢিলেঢালা থাকে। কিন্তু যখনই নিয়ত
করার জন্যে দু'হাত ওপরে তুলি তখনই
কুদরতীভাবে দেহ স্থির হয়ে যায়। সকল
বৈষয়িক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। মস্তিষ্ক
থেকে একটি আলো এসে মেরুদন্ডের হাড়
আলোকিত হয় এবং সেই আলো দেহের
অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পৌঁছে যায়।
একথা সবাই জানে,শারীরিক স্বাস্থ্যের
জন্যে মেরুদন্ডের একটি বিশেষ শক্তি
রয়েছে। মেরুদন্ডের সুস্থতা ও শক্তির উপর
ভালো স্বাস্থ্য নির্ভর করে।
নামাযে কিয়াম করার মাধ্যমে হাত
পায়ের জোড়া ও কোমর শক্তিশালী হয়
এবং গিঁটে বাত দূর হয়। তবে শর্ত
হচ্ছে,নামাযের সময়ে কিয়াম হতে হবে
অত্যন্ত স্থির ও সঠিকভাবে।
৩.ঝুঁকে রুকু করার সময়ে হাঁটুর ওপর দুই হাত
রাখার ফলে পিঠ সোজা হয়ে থাকে। এতে
পাকস্থলী শক্তিশালী হয়। ডাইজেস্ট বা
হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। অন্ত্র রোগ,পেটে
ভাজ পড়া,পেটে ব্যথা ইত্যাদি রোগ
আরোগ্য হয়। রুকুর মাধ্যমে কিডনি এবং
হৃৎপিন্ড শক্তিশালী হয়,কোমরে এবং
পেটে চর্বি জমতে পারে না। দেহে রক্ত
সঞ্চালন বেড়ে যায়। মাথা এবং
হৃৎপিন্ডের সাথে যেহেতু ঘনিষ্ঠ
যোগাযোগ রয়েছে,এ কারণে হৃৎপিন্ড
থেকে রক্ত মাথায় সঞ্চালিত হয়,মাথা
ঠান্ডা থাকে। হৃৎপিন্ডও শান্ত সুস্থ থাকে।
হৃৎযন্ত্র কার্যকর ও শক্তিশালী হয়।
মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি পায়। রুকু করার
সময়ে যেহেতু হাত নিচের দিকে যায়,এ
কারণে কাঁধ থেকে শুরু করে হাতের আঙ্গুল
পর্যন্ত পুরো অংশের ব্যায়াম হয়ে যায়।
ফলে বাহুমূল শক্তিশালী হয়। বার্ধক্যের
কারণে দেহে যেসব বাড়তি উপাদান জমা
হয়,সেসব উপাদান আপনা থেকেই বেড়িয়ে

No comments:
Post a Comment
Note: only a member of this blog may post a comment.