Pages

Tuesday, 3 September 2019

জান্নাত জাহান্নাম হওয়ার আগেই কিভাবে নবী (সা) মেরাজে সব দেখে আসলেন ?


নাস্তিকের প্রশ্ন ও জবাবঃ
প্রশ্নঃ-
বিচার দিবসে নির্ধারিত হবে কে জাহান্নামি আর কে জান্নাতি।তাহলে মেরাজের রজনিতে মুহাম্মদ(সাঃ) কিভাবে মানুষকে জান্নাতে ও জাহান্নামে দেখলেন?

জবাবঃ-
ইসলাম সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞানের অভাবেই এধরনের প্রশ্নের উদ্ভব হয়।যে হাদিস উল্লেখ করে মিথ্যাচার করা হচ্ছে সেই হাদিসে রাসুল(সাঃ) বলেন-

ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্নিত নবী (সাঃ) বলেছেন," আমি জান্নাতের প্রতি দৃষ্টিপাত করে দেখলাম তার অধিকাংশ অধিবাসী গরীব আর জাহান্নামের প্রতি দৃষ্টি করে দেখলাম তার অধিকাংশ অধিবাসী মহিলা।(তিরমিযী)
অন্য হাদিসে বলেন-
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন একবার ঈদুল ফিতরের দিন রাসূল (সঃ) ঈদগাহে গিয়ে উপস্থিত মহিলাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন; হে নারী সম্প্রদায়! দান খয়রাত কর কেননা আমাকে অবগত করানো হয়েছে দোজখের অধিকাংশ অধিবাসি তোমাদের নারী সম্প্রদায়রই হবে। (দীর্ঘ হাদীসের অংশ বিশেষ ( বুখারী-মুসলিম)

বিশ্লেষণঃ-
**********
বিভিন্ন হাদিসে এসেছে মৃত্যুর পর আত্মা গুলোকে ইল্লিন ও সিজ্জিনে রাখা হয়।
পাপীদের আত্মা সিজ্জিনে আর পুন্যবানদের আত্মা ইল্লিনে রাখা হয়।
মৃত্যুরপরে সওয়াল জবাবেই নিশ্চিত হয়ে যায় কে জান্নাতি আর কে জাহান্নামি। সে হিসাবেই আত্মাগুলো রাখা হয় উল্লেখিত স্থানে।

এখন আল্লাহ্‌ যদি তাঁর হাবিবকে(সাঃ)জাহান্নামিদের পাপের শাস্তি দেখাতে চান সেটা কি তার জন্য খুব কঠিন?
একটি উদাহরণ দিচ্ছি-
অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার ঘর তৈরির আগেই ঘরের নকশা তৈরি করেন।ঘর তৈরির আগেই তিনি ঘরের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।কোন রুম কত বড় হবে,কোন রুমে কেমন ফার্নিচার থাকবে, এমন কি ফার্নিচারের সাইজ ও সেটিং ও তিনি বলে দেন।
অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার ঘরের বা নির্মিত স্থাপনার একটি মডেলও তৈরি করেদেন যা দেখে যেকেউ বুঝতে পারেন ঘর বা স্থাপনাটি কেমন হবে।

প্রশ্ন হচ্ছে-
সামান্য একজন ইঞ্জিনিয়ার যদি ঘর তৈরির আগেই বলে দিতে পারেন ঘরের বিস্তারিত তথ্য আর দেখিয়ে দিতে পারেন ঘরের পরিপূর্ণ আকৃতি তাহলে মহা পরাক্রমশালী স্রষ্টা বিচার দিবসের আগে দেখাতে পারবেন না জান্নাতে ও জাহান্নামে মানুষ কিভাবে থাকবে?
সুতরাং মিরাজে তিনি পাপিদের শাস্তি কিভাবে হবে দেখে থাকলে অবাক হওয়ার কি আছে?
এবার প্রশ্ন আসতে পারে-
তাহলে কিয়ামতের মাঠে কেন বিচার করা হবে যদি আগেই জানা থাকে কে জান্নাতি আর কে জাহান্নামি?

কবরের সওয়াল জবাবে নিশ্চিত হবে কে জান্নাতি আর কে জাহান্নামি। কিন্তু কে কতটা পুরুষ্কার পাবেন আর কে কতটা শাস্তি পাবেন তা নির্ধারিত হবে বিচার দিবসে।

আল্লাহ্‌ বলেন--
আর যারা অসৎকাজ নিয়ে আসবে, তাদের সবাইকে অধোমুখে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে। তোমরা কি যেমন কর্ম তেমন ফল--- ছাড়া অন্য কোন প্রতিদান পেতে পারো?(নামল-৯০)
আরো বলেন---

﴿مَن جَاء بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ خَيْرٌ مِّنْهَا وَمَن جَاء بِالسَّيِّئَةِ فَلَا يُجْزَى الَّذِينَ عَمِلُوا السَّيِّئَاتِ إِلَّا مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾

যে কেউ ভাল কাজ নিয়ে আসবে তার জন্য রয়েছে তার চেয়ে ভাল ফল এবং যে কেউ খারাপ কাজ নিয়ে আসে তার জানা উচিৎ যে, অসৎ কর্মশীলরা যেমন কাজ করতো ঠিক তেমনটিই প্রতিদান পাবে।(কাসাস ৮৪)

অর্থাৎ বিচার দিবসে তিনি ন্যায় বিচার করবেন, ততটুকুই শাস্তি দিবেন যতটুকু পাপ করেছে আবার ততটুকুই পুরোষ্কার দিবেন যতটুকুর তারা যোগ্য কমও না বেশিও না।

আশাকরি উত্তর পেয়েছেন।
আল্লাহ্‌ সবাইকে সত্য উপলব্ধি করার তওফিক দান করুন,আমিন।

No comments:

Post a Comment

Note: only a member of this blog may post a comment.