যারা ইসলাম সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন উপস্থাপন করেন এবং ইসলামকে বিশুদ্ধভাবে জানতে চান তাদের জন্য আমাদের এই উপহার ।
▼
Pages
▼
Wednesday, 11 September 2019
মানুষ চাদে অবতরন করে সত্য, কিন্তু এ নিয়ে অপপ্রচার ও ভুল ধারনার নিরসন হোক।
মানুষ চাদে অবতরন করে সত্য, কিন্তু এ নিয়ে অপপ্রচার ও ভুল ধারনার নিরসন হোক।
**************************************
চাঁদে অবতরণের ষড়যন্ত্র তত্ত্বে (Moon
Landing Conspiracy Theory) বিশ্বাসীরা মনে
করে, এপোলো নভোযানের চাঁদে অভিযান
মিথ্যা, সাজানো ঘটনা (Hoax) এবং নীল আর্মস্ট্রং ও
এডউইন অলড্রিনসহ আমেরিকার কোন
নভোচারীই চাঁদে যাননি। তাদের বিশ্বাস,
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা চাঁদে
অবতরণের যেসব ছবি ও ভিডিও প্রচার করেছে, তা
মিথ্যা এবং এতে আসলে চাঁদে নামার কোন দৃশ্য নয়,
১৯৭৪ সালে বিল কেসিং নামে
একজন আমেরিকান লেখক তার ‘We Never Went to
the Moon’ নামক বইতে প্রথম দাবি করেন, ছয়টি
এপোলো অভিযানের সবগুলোই বানোয়াট।
এরপর এ নিয়ে বহু গবেষণাধর্মী বই
বেরিয়েছে, তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে এবং
ওয়েবসাইট দাঁড়িয়ে গেছে। তখনকার সময়ে
মহাকাশভ্রমণের প্রযুক্তিগত অনগ্রসরতা, চন্দ্রপৃষ্ঠ
ও মহাকাশের প্রতিকূল পরিবেশ এবং চন্দ্রাভিযানের
ছবি ও ভিডিওতে বিভিন্ন অসামঞ্জস্যতার আলোকে
অনেকেই মনে করে, চাঁদে অভিযান নিতান্তই নাসার
সাজানো ঘটনা। চাঁদে অবতরণের ষড়যন্ত্র
তত্ত্বের বিস্তারিত জানতে উইকিপিডিয়ার এই নিবন্ধটি
দেখা যেতে পারে।
★
প্রথম প্রথম পাত্তা না দিলেও শেষ পর্যন্ত মহাকাশ
গবেষণা সংস্থা নাসা এসব অভিযোগের জবাব দিতে
বাধ্য হয় এবং চন্দ্রাভিযানের সপক্ষে তথ্যপ্রমাণসহ
নাসার অফিশিয়াল বক্তব্য তুলে ধরে তাদের
ওয়েবসাইটে । এপোলো অভিযানের ছবিতে
বিভিন্ন অসামঞ্জস্যতার অভিযোগের জবাব পাওয়া
যাবে উইকিপিডিয়ার এই নিবন্ধে । অন্যদিকে নাসা ছাড়াও
আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশে পরিচালিত স্বতন্ত্র
গবেষণা ও পরীক্ষা-নীরিক্ষায় মানুষের চাঁদে
অবতরণের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে, যার বিস্তারিত
বিবরণ রয়েছে উইকিপিডিয়ার আরেকটি নিবন্ধে।
তারপরও যারা বিশ্বাস করতে চায় না, তাদের বিশ্বাস করায়
কার সাধ্য!
★
শীতল যুদ্ধ (Cold War) চলাকালীন রাশিয়াকে
টেক্কা দেওয়ার জন্য ইউএসএ’র একটা চাল ছিল। মিথ
ব্যবসায়ীদের কাছেও এটা বেশ একটা হট-কেক।
ইউটিউব, ফেসবুক এবং নানান হোক্স (hoax – গুজব)
সাইটে চন্দ্রাভিযানের খুঁত বের করার জন্য তৈরি করা
ছবি / ভিডিওর অভাব নেই। চন্দ্রাভিযান মিথ বেশ
পুরনো ব্যাপার হলেও বাংলাদেশের প্রত্যন্ত
এলাকার মানুষের কাছে ইন্টারনেট যেমন অল্প
কিছুদিন ধরে পৌঁছাতে শুরু করেছে। একইভাবে এই
ভুয়া সংবাদগুলোও নতুন করে পৌঁছাচ্ছে। এমনকি
বাংলাদেশের একটা প্রথম সারির অনলাইন নিউজ
পোর্টালও ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবরের সংখ্যায়
একই রকম একটি খবর প্রকাশ করেছে। আজকের
লেখা চন্দ্রাভিযানের সেই মিথ নিয়েই।
রাশিয়াকে ফেলে আমেরিকা আগে চাঁদে
কেমনে গেলো?
অনেকেই বলতে চান যে ঐ সময় আমেরিকা
টেকনোলজির দিক থেকে রাশিয়ার চেয়ে
অনেক পিছিয়ে ছিলো। তাহলে, রাশিয়া কেন
আগে যেতে পারলো না? আমেরিকা আগে
কীভাবে গেলো?
সত্যিটা হচ্ছে, আমেরিকাও তখন মহাশূন্য যাত্রা নিয়ে
অনেক বেশি সচেতন ছিলো। কিন্তু ওদের জন্য
বজ্রপাতের মত খবরটা ছিলো রাশিয়া আগেই
মহাকাশে যান পাঠিয়ে দিয়েছে। তখন তারা
জোরেসোরে এক্সপ্লোরার মিশন নিয়ে
নেমেছিলো, এবং খুব অল্প সময়ে ওরাও মহাকাশে
যান পাঠিয়েছিলো। এরপর প্রেসিডেন্ট জন এফ
কেনেডি ১৯৬২ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর এক
বিখ্যাত ভাষণে (বাংলা অনুবাদ করেছেন রজত
দাশগুপ্ত)
চাঁদে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। এবং সেই
অঙ্গীকারেই আমেরিকা ১৯৬৯ সালে চাঁদে
অবতরণ করে।
আসুন প্রথমে দেখি, বাতাস ছাড়া পতাকা নেতিয়ে
পড়ছে না কেন?
চন্দ্রাভিযানের মিথ ব্যবসায়ীদের মধ্যে
সবচেয়ে জনপ্রিয় যুক্তি হচ্ছে চাঁদে তো বাতাস
নেই তাহলে পতাকা উড়ছে কিভাবে?
চাঁদে যে পতাকা উড়ানোর জন্য বাতাস নেই সেটা
নাসার বিজ্ঞানীরাও জানতেন। হ্যাঁ উনারা পৃথিবীতে
বসেই জানতে পেরেছিলেন যে চাঁদে বাতাস
নেই। এখন পৃথিবীতে যখনই পতাকা উড়ানো হয়
স্বাভাবিক অবস্থায় পতাকাটা দণ্ডের সাথে নেতিয়ে
থাকে। বাতাস আসলে পত-পত করে উড়তে
থাকে। চাঁদে তো বাতাস নেই, ফলে সবসময়ই
নেতিয়ে থাকবে। ইউএসএ’র পতাকা তাহলে বোঝা
যাবে কিভাবে? তাই পতাকাকে সোজা রাখার জন্য তাঁরা
উল্টো “L” এর মত একটা দণ্ড ব্যবহার করলেন।
কী চমৎকার বুদ্ধি! বাতাস এসে পত-পত করে
উড়ানো লাগবে না, সবসময়ই পতাকা সোজা হয়ে
থাকবে। এটা অবশ্য কোনও মৌলিক আবিষ্কার নয়,
অনেক জায়গায়ই এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
পতাকা কি আসলেই উড়ছে?
আমাদের প্রথমে চিন্তা করতে হবে উড়া বলতে
কি বুঝছি? উড়া এবং নড়া এক ব্যাপার নয়। পতাকা উড়ছে
বলে যে ভিডিওটি প্রচার করা হয় তা আসলে বাতাসে
পতাকা উড়ছে সেরকম নয়। পতাকা মাটিতে লাগানোর
সময় “L” আকৃতির দণ্ডের নড়াচড়ায় পতাকাটাও নড়ছে।
আর যেহেতু চাঁদে বাতাস নেই ফলে বাতাসের
বাধাও নেই। ঘর্ষণহীন পরিবেশে পতাকা বরং
পৃথিবীর পরিবেশের চেয়ে বেশিই নড়ছে। এই
নড়াচড়ার ভিডিওকে পতাকার উড়া বলে প্রচার করাটা
আসলেই হাস্যকর।
★ পায়ের ছাপ সংক্রান্ত গুজব
আরেকটা প্রচলিত গুজবে নভোচারীদের
পায়ের ছাপ আর জুতো দেখিয়ে অনেকটা
বিজয়ীর হাসি হেসে বলা হয়, “শুনি, এই ছাপ
কেমনে আসলো?”
যে এই প্রোপাগান্ডা প্রথমবারের মত ছড়িয়েছে,
সে এটা দেখায়নি যে, ঐ জুতোটা আসলে
ভেতরের জুতো যেটার ছাপ পড়ার কথা না।
বাইরের জুতোটা না দেখিয়ে ওরা কী প্রমাণ
করতে চায়, কে জানে?
প্রোপাগান্ডা ভিডিওগুলো আসলেই খুবই চমৎকার
করে বানানো হয়। বিশ্বাস করে ফেলতে ইচ্ছা
করে।( নিচে ছবি)
* বিজ্ঞানের উপরে বিশ্বাস রাখুন। আর
নাসার এপোলো মিশনের এই চমৎকার ছবিগুলো
দেখুন। NASA অনেকগুলো ( প্রায় দশ হাজার ) ছবি
রিলিজ করেছে এপোলো মিশনগুলোর।
চাঁদ থেকে কত ক্ষুদ্র দেখায় আমাদের এই নীল
গ্রহটা। খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে মানুষ হয়তো
ভিন্ন গ্রহে বসতি স্থাপন করতে করতে একদিন
মহাবিশ্বের এতই দূরে চলে যাবে যে তাঁদের
আদি নিবাস খুঁজে বের করার জন্য সেখান থেকে
স্পেস মিশন পরিচালিত হবে।
ছবিসূত্রঃ পাবলিক ডোমাইনে প্রকাশ করা নাসার ফ্লিকার



No comments:
Post a Comment
Note: only a member of this blog may post a comment.