Visitors

Wednesday, 11 September 2019

ভাগ্য তাকদির এবং ইউটিউব কেন ব্যাবহার করে মুসলিমরা ?


ভাগ্য তাকদির এবং ইউটিউব কেন ব্যাবহার করে মুসলিমরা ?

মানুষের ভাগ্য পূর্ব নির্ধারিত,লিখিত।মানুষ তাই করে যা তার ভাগ্যে লেখা আছে।তাহলে কেউ যখন পাপ কাজ করে, ধর্ষণ করে,চুরি-ডাকাতি করে,মদ খায়, তখন সেগুলো মূলত সে করেনা।আল্লাহ তার ভাগ্যে লিখে রেখেছেন বলে, আল্লাহ ইচ্ছে করেন বলেই তো করে। নইলে করতে পারতোনা।আল্লাহর হুকুম ছাড়া গাছের একটি পাতাও তো নড়েনা। তাহলে যারা পাপ করে তাও তো আল্লাহর হুকুমেই।তিনি এমনটি লিখে রেখেছেন বলেই তো করে।এরজন্যে শাস্তি দেওয়া হবে কেনো? ' উপরের এই প্রশ্নটি 'তাকদির' তথা 'ভাগ্য' সম্পর্কিত। বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। মুক্তমনা টাইটেলধারী ইসলাম বিদ্বষীগন একজন তরুন মুসলিম যুবকের ব্রেইনওয়াশ করতে যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রপাগান্ডা চালায়, তার মধ্যে এই প্রশ্নটিও অন্যতম।তারা বোঝাতে চায়, আমরা যা করি (পাপ/পূণ্য) তার সবই আল্লাহ আমাদের জন্মের অনেক আগেই নির্ধারন করে রেখেছেন। আল্লাহ আসিফ মহিউদ্দীনের ভাগ্য লেখার সময় লিখেছেন যে সে নাস্তিক হবে।ইসলাম বিরোধী হবে।তাই সে নাস্তিক হয়েছে।ইসলাম বিদ্বেষী হয়েছে।এখানে মূলত দোষটি কার? আসিফ মহিউদ্দীনের? নাকি আল্লাহর? (নাউজুবিল্লাহ)। এমনটি বলে তারা মূলত ইসলাম ধর্ম আর কোরআনকে অযৌক্তিক প্রমানের চেষ্টা করে। আর, আমার মতো যেসকল যুবকের ধর্মীয় জ্ঞান খুব অল্প, তারা ইসলাম বিদ্বেষীদের এসব কথা শুনে ভাবে,- 'আরে! সত্যিই তো! কথায় তো লজিক আছে।আল্লাহ তো ভাগ্য আগেই লিখে রেখেছেন যা কোরআনে আছে।আর তাই-ই তো আমরা করছি।তাহলে এখানে মূল ডিরেক্টর তো আল্লাহ।তাহলে কেউ ভাল কাজের জন্য পুরষ্কার,কেউ খারাপ কাজের জন্য তিরস্কার হবে কেনো?' এইসমস্ত কথিত মুক্তমনাদের কথার ফাঁকে ফাঁকে ব্যবহৃত কিছু দূর্বোধ্য, ভারি ইংরেজি শব্দ শুনে আমরা ভাবি,- 'আহা! ভাঈয়া কত্ত জ্ঞানী! কতোগুলো কিতাবই না পড়েছে! নাহলে এমন যুক্তিনির্ভর কথাগুলো ব্রেইনে আসে ক্যামনে? এরপর আমরা সন্দেহে পড়ে যায়।সেই সন্দেহ একসময় সংশয়ে রূপ নেয়।আর হয়ে পড়ি ঈমানচ্যুত। ' তাকদির সম্পর্কিত এই বিষয়টি নিয়ে প্রথমদিকে আমারও কিছু কনফিউশান ছিল।কারন ব্যাপারটা ঠিক বুঝতাম না।মাথায় খালি সেসবই মাথায় আসতো যা কথিত মুক্তমনা বুদ্ধিজীবিকূল বোঝায়।আলহামদুলিল্লাহ! পরে বুঝতে পারি বিষয়টি। বিষয়টি বোঝার আগে আপনাকে দুটি বিষয়ে ক্লিয়ার হতে হবে। ১) তাকদিরের কিছু বিষয় এমন নির্ধারিত যে যার উপর আমাদের কারো হাত নেই।যেমন- জন্ম,মৃত্যু এসব।এসব ব্যাপারে আপনাকে পরকালে জিজ্ঞাসাও করা হবেনা। ২) কিছু বিষয় আছে যার উপর আমাদের হাত আছে।যেমন- আমরা যা করি।ভাল কাজ করি না খারাপ কাজ করি, এসবে।অর্থাৎ, আপনি এক্ষেত্রে স্বাধীন।আপনি আপনার পছন্দ মত পথটি বেছে নিতে পারবেন।সে সুযোগ আপনার কাছে রয়েছে। ঘাপলাটা মূলত দুই নাম্বারে। ওরা বলে, আমাদের পছন্দ মত পথ বেছে নেবার সুযোগ কই? আল্লাহ তো সবই আগে থেকে লিখে রেখেছে। আল্লাহ তা'লা আগে থেকেই লিখে রেখেছে বলেই যে কেউ নাস্তিক হচ্ছে,কেউ আস্তিক হচ্ছে,কেউ ধার্মিক হচ্ছে,কেউ অধার্মিক হচ্ছে ব্যাপারটি কিন্ত এমন নয়। ব্যাপারটি হচ্ছে এই- 'আল্লাহ হলেন সর্বজ্ঞ।তিনি ভূত-ভবিষ্যত সব জানেন।তিনি জানেন আসিফ মহিউদ্দীন কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে বিফ বিরিয়ানি গিলতে গিলতে মুসলমানদের কোরবানিকে বর্বর পশুহত্যা বলে মুক্তমনা ব্লগে লেখালেখি করবে।তাই তিনি সেটা আগেই লিখে রেখেছেন আসিফের তাকদিরে। ব্যাপারটি এমন না যে, আল্লাহ লিখে রেখেছেন বলেই আসিফ লিখছে। ব্যাপারটি এমন, আল্লাহ তার ইলমের দ্বারা জানেন যে আসিফ কাল সকালে সেটাই করবে, তাই তিনি সেটা লিখে রেখেছেন। একটি উদাহরন দেওয়া যাক।ধরুন আপনি জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের নবম শ্রেনীর ম্যাথের ক্লাশ নিয়েছেন।দীর্ঘ এগারো মাস টানা ক্লাশ নেওয়ার পর নবম শ্রেনীর প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রী সম্পর্কে আপনার একটি অভিজ্ঞতা হয়ে যাবে।ধরুন, ডিসেম্বরে তাদের আপনি ম্যাথের একটি ১০০ নাম্বারের পরীক্ষা নিবেন।পরীক্ষার প্রশ্নও আপনি তৈরি করেছেন।এখন, প্রশ্নও আপনার তৈরি, ছাত্র-ছাত্রীগুলোও আপনার। তাদের কার কেমন মেধা,কে কিরকম অঙ্ক পারে, আপনার তৈরি করা প্রশ্নে কে কে পাশ করতে পারবে,আর কে কে ফেল করবে, তার মোটামুটি একটি ক্লিয়ার আইডিয়া আপনার মধ্যে থাকবে। ধরুন, পরীক্ষাটি নেওয়ার আগে আপনি একটি কাগজের একপাশে যারা পাশ করবে তাদের নাম, এবং অন্যপাশে যারা ফেল করবে তাদের নাম লিখে রেখেছেন। পরীক্ষা নেওয়ার পরে দেখা গেলো, আপনি যারা পাশ করবে বলে লিখে রেখেছেন তারাই পাশ করেছে, আর যারা ফেল করবে বলে লিখে রেখেছেন,তারাই ফেল করেছে। তার মানে কিন্ত এই না যে, পরীক্ষার আগে আপনি যারা পাশ করবে বলে লিখে রেখেছেন বলে তারা পাশ করেছে, যারা ফেল করবে বলে লিখে রেখেছেন বলেই তারা ফেল করেছে।ব্যাপারটি হলো এই- আপনি জানতেন কারা কারা পাশ করবে, কারা কারা ফেল করবে। তাকদিরের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি সেইম।আল্লাহ তা'লা জানেন আমরা কে কি করবো।তাই তিনি তা লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। এমন না যে,তিনি আমাদের উপর তা আগে থেকে লিখেই চাপিয়ে দিচ্ছেন। প্রশ্ন উঠতে পারে, আল্লাহ যদি সর্বজ্ঞই হবে,তাহলে এসব পরীক্ষার কি দরকার? উত্তর হলো এই- 'কিয়ামতের মাঠে কেউ যেন আল্লাহর দিকে পক্ষপাতের প্রশ্ন তুলতে না পারে।কেউ যেন বলতে না পারে আল্লাহ তার পছন্দের দলকে জান্নাতে আর অপছন্দের দলকে জাহান্নামে পাঠিয়েছেন।কেউ যেন বলতে না পারে, 'দুনিয়ায় আমাদের মাঝে পরীক্ষার ব্যবস্থা করলে আজকে অবশ্যই আমরা পাশ করে জাহান্নামের বদলে জান্নাতে যেতে পারতাম।

============================================
মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তাঁর আবিস্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি মুসলমানদের জন্য ঠিক হচ্ছে ?
নাস্তিক ভাইয়া ও আপুরা প্রায়ই একটা প্রশ্ন করেন যে মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তাঁর আবিস্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি আমাদের জন্য ঠিক হচ্ছে ? আচ্ছা নাস্তিক আপুরা যে প্রতিদিন সকালে রিকশায় চড়ে ক্যাম্পাসে যান সেই রিকশাওয়ালা তো মুসলমান তাইলে সেই রিকশায় চড়া কি ঐ নাস্তিক আপুর জন্য ঠিক হচ্ছে ? এখন হয়তো ঐ নাস্তিক আপু আমাকে বলবেন যে - '' আমি তো আমার বাপের টাকা খরচ করেই রিকশায় চড়ছি কিন্তু তুমি তো FREE তে ফেইসবুক ব্যবহার করছ ? '' আপাত দৃষ্টিতে ফেইসবুক ব্যবহার করা FREE হলেও মার্ক জুকারবার্গ কিন্তু Google Adsense এর মাধ্যমেই আমাদের কে উনার ফেইসবুক ব্যবহার করতে উত্সাহ দেন। আর আমরা ফেইসবুক ব্যবহার করি বলেই মার্ক জুকারবার্গ ফেইসবুক থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার কামিয়ে বান্ধবীদের সাথে ছবি তুলতে পারেন। আর ফেইসবুকের সব কিছুই কিন্তু FREE না। সামান্য কিছু ডলারের অভাবে বর্তমানে অনেক বড় বড় পেইজের এডমিনরা এখন Like খরায় ভুগছেন। Gmail ব্যবহার করাও কিন্তু Free কিন্তু আপনি পিসি থেকে Gmail এ ঢুকলে Google ও আপনাকে অনেক বিজ্ঞাপন দেখাবে। ইন্টারনেটের অনেক কিছু আপাতদৃষ্টিতে Free মনে হলেও এটা দেখিয়ে ঐসব কোম্পানী তাদের user বাড়িয়ে তারপর ঐ user দের কে ভিত্তি করে তারা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার আয় করে। আচ্ছা মার্ক জুকারবার্গ তো একজন Programmer আর আমরা জানি কম্পিউটার Program করতে এলগরিদমের সাহায্য নিতে হয় ? আর এলগরিদম বীজগণিতের জনক তো মুসলমানরা। মুসলিম বিজ্ঞানী আল খাওরেজমি তো বীজগণিত ও এলগরিদমের জনক। এলগরিদম শব্দটি আল খাওরেজমি থেকেই এসেছে। আর আল খাওরেজমির লেখা ''আল জেবর ওয়াল মুকাবিলা '' বই থেকেই আল জেবরা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। তাহলে মধ্যযুগের একজন মুসলিম গণিতবিদের আবিস্কৃত তত্ত্বের সাহায্যে ফেইসবুকের Programming চালানো কি মার্ক জুকারবার্গের জন্য ঠিক হচ্ছে ? আসলে এইখানে আমাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে যে জ্ঞান বিজ্ঞান বস্তু উপকরন এইগুলি হচ্ছে মানব সভ্যতার অংশ। এইসব জড় বস্তু কোন জাতি বা ধর্মের নিজস্ব সম্পত্তি নয়। সাহাবীরা ইরাক ইরান মিশর তুরস্ক জর্ডান চীন এইসব দেশের খ্রিষ্ট ধর্ম, অগ্নি পূজ্ মূর্তি পূজা, এবং ইসলাম বিরোধী সংস্কৃতিকে অস্বীকার করেছিলেন কিন্তু ঐসব দেশের প্রযুক্তি ভাষা ও খাদ্যভাস কে সহজ ভাবে গ্রহন করেছিলেন। আর ধর্ম হচ্ছে যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু এই মানব সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি হচ্ছে সমগ্র মানব জাতির সম্পদ। বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকা পেটেন্টের মাধ্যমে প্রযুক্তি পণ্য গুলি খুব ব্যয়বহুল করে তুলেছে ইসলামী শরীয়াহ কিন্তু তথাকথিত পেটেন্টের এই কড়াকড়ি গুলি সমর্থন করে না।
=-==============================


No comments:

Post a Comment

Note: only a member of this blog may post a comment.

তথ্য সত্য মুক্তি প্রগতি

তথ্য সত্য মুক্তি প্রগতি কুরআনে বিস্ময়!যে বিস্ময় ভাবনাতে ও আসেনা। ★ আজ দেখব,সূরা আসহাবে কাহফ হতে, সূরা,আয়াত,ঘটনা বর্ণনা,বর্ণিত শব্দের...