দাদা, পুজো দেখতে যাবেন না?
- না ভাই, সেটাতে আমার ধর্মে মানা
আছে।
- কেন?
- আমরা যখন গরু কুরবানি করি, সেই
জায়গায় আপনাদের যাওয়া নিষেধ
না?
- হ্যাঁ নিষেধ। সে স্থানে ভগবানের
অভিশাপ পরে।
- ঠিক তেমনি, অন্য ধর্মের ধর্মীয়
অনুষ্ঠানের জায়গায় যাওয়া আমাদের
জন্যও নিষেধ। আমার ধর্মমতে পুজোর
স্থানে আল্লাহর গজব নাজিল হতে
থাকে।
হজরত উমর (রা) বলেছেন, "তোমরা
মুশরিকদের উপসনালয়ে তাদের উৎসবের
দিনগুলোতে প্রবেশ করোনা। কারন
সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গজব
নাজিল হতে থাকে"। (বায়হাক্বী)
যে স্থানে আল্লাহর গজব নাজিল হয়
আমার ধর্মমতে, সেখানে যাই কি করে?
- ঠিক আছে, পুজো উপলক্ষ্যে প্রসাদ
খেতে তো পারবেন ?
- আপনার বাসায় অন্য যেকোনো সময়
দাওয়াত খেতে যেতে পারব। এ
বিষয়ে মানা নেই। কিন্তু পুজো
উপলক্ষ্যে কিছু খেতে পারব না।
- ব্যাপারটা একটু অন্য রকম হয়ে গেল না?
- ধরুন, কুরবানি ঈদের দাওয়াত দিয়ে
আমি আপনাকে গরুর মাংস খেতে
বললাম। আপনি কি খাবেন?
- না, অবশ্যই খাব না।
- ঠিক তেমনি কিছু কিছু জিনিস
আমাদের জন্যও ধর্মমতে খাওয়া নিষিদ্ধ
(হারাম)। যেমন- মদ, শুকুরের গোশত,
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবেহ
করা গোশত, অন্য ধর্মের ধর্মীয় উৎসবের
খাবার ইত্যাদি। সব ধর্মেরই নিষিদ্ধ
কিছু বিষয় থাকে যা মানতে হয়।
- কিন্তু ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
- ওটা হয়তো অন্যদের জন্য হতে পারে,
কিন্তু আমাদের জন্য না। অন্য ধর্মের
অনুষ্ঠানে গেলে যেখানে আমার
নিজেরই ধর্ম থাকছে না, সেখানে
যার যার ধর্ম কথাটা নিয়ে কি করব?
- বুঝিনি, একটু বুঝিয়ে বলুন।
- মানে হল, ইসলাম ধর্মের মূলনীতি
অনুযায়ী অন্য কারো ধর্মের উৎসবে
স্বেচ্ছায় আনন্দের সাথে যোগদান
করার অর্থই হল আল্লাহর সাথে শিরকের
কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা। আর
আল্লাহ সব গুনাহই মাফ করে দিবেন,
একমাত্র শিরকের গুনাহ ছাড়া।
আল্লাহ বলেন “নিশ্চয়ই আল্লাহ
তা’আলা তার সাথে শিরক করার
অপরাধ ক্ষমা করবেন না। এ ছাড়া অন্য
সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে
দিবেন।” (সুরা নিসা: ৪৮)
- তাহলে আপনি কি অন্যদের অপছন্দ
করেন?
- সেটা করব কেন? যার ধর্ম তার কাছে।
আর ইসলাম এটাও শিক্ষা দেয়,
অন্যদেরকে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান
পালনে কোন প্রকার বাধা না দিতে।
আমি প্রয়োজনে আপনাদের
নিরাপত্তা দিব, পাহারা দিব, কেউ
বিপদগ্রস্থ হলে তাকে সাহায্য করার
জন্য ঝাঁপিয়ে পরব, অসুস্থ হলে চিকিৎসা
দিব। এতে আমার আপত্তি নেই।
কিন্তু সব ধর্মেরই কিছু বিধি নিষেধ
থাকে। আপনার ধর্মেও আছে, আমার
ধর্মেও আছে, সেগুলো তো মানা
উচিত।
- তাহলে কি আপনি আমার বাসায়
কখনো দাওয়াত খাবেন না?
- খাব না কেন? অন্য একদিন আপনার
বাসায় দাওয়াত দিয়েন। আমি গিয়ে
খেয়ে আসব। সেটাতে কোন বিধি
নিষেধ নেই।
আমাদের নবীজিও (সা) অন্য ধর্মের
লোকদের বাসায় গিয়ে খেয়ে
এসেছেন। এক ইহুদী উনাকে দাওয়াত
দিয়েছিল, উনি গিয়ে খেয়েছিলেন।
আর অবশ্যই আমার বাসায় আপনারো
নেমন্ত্রন থাকল।
- কিন্তু ব্যাপারটা একটু সাম্প্রদায়িক
হয়ে গেল না?
- অসাম্প্রদায়িকতা মানে এটা নয় যে
আপনি আমার মসজিদে গিয়ে আমাদের
নামাজ পরা দেখবেন, আর আমি আপনার
পুজো মণ্ডপে গিয়ে পুজো করা দেখব।
এটা অসাম্প্রদায়িকতা নয়, এটা
অধার্মিকতা। এতে আপনার ধর্মও
থাকবে না, আমার ধর্মও থাকবে না।
আমি আপনাকে সম্মান করি, আপনি
আমাকে করেন, অথচ দুজন দু'ধর্মের। আমি
আপনার কাছে নিরাপদ, আপনি আমার
কাছে নিরাপদ। আপনার বিপদে আমি
এগিয়ে আসব, আমার বিপদে আপনি
এগিয়ে আসবেন। দেশের যেকোনো
আপদ বিপদে একসাথে কাঁধে কাঁধ
মিলে কাজ করব।
একজন মানুষ হিসেবে, একজন
বাংলাদেশী হিসেবে একে অন্যের
প্রতি এই যে সম্মান, এটাই হল প্রকৃত
অসাম্প্রদায়িকতা।
যারা ইসলাম সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন উপস্থাপন করেন এবং ইসলামকে বিশুদ্ধভাবে জানতে চান তাদের জন্য আমাদের এই উপহার ।
Visitors
Sunday, 25 August 2019
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
তথ্য সত্য মুক্তি প্রগতি
তথ্য সত্য মুক্তি প্রগতি কুরআনে বিস্ময়!যে বিস্ময় ভাবনাতে ও আসেনা। ★ আজ দেখব,সূরা আসহাবে কাহফ হতে, সূরা,আয়াত,ঘটনা বর্ণনা,বর্ণিত শব্দের...
-
Mercy Killing লেখকঃ তানভীর আহমেদ মস্তিষ্কের নিচে গলার পিছন দিকটায় থাকে Spinal Cord যা বাংলায় সুষুম্না কান্ড হিসেবে পরিচিত। আর পুরো শরীরে...
-
কুরআন কি মানুষের পক্ষে লেখা সম্ভব ? মানুষের যে জিনিসটি আল্লাহ নিজের জন্য সৃষ্টি করেছেন ।” €€ ***************************************...
-
নক্ষত্রটির নাম Sirius। বাংলায় লুব্ধক তারা। রাতের আকাশে এই তারাটাকে দেখতে সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখায়! খালি চোখে দেখা না গেলেও এটা মূলত দুইটা তারার ...

No comments:
Post a Comment
Note: only a member of this blog may post a comment.