নাস্তিকের প্রস্ন ও জবাবঃ
**********************
সুরা-- যুমার ৪৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে--
" হে নবী বলেন- সুপারিশের মালিক আল্লাহ!! "
তাহলে-- নবী মুহাম্মদ কিভাবে সুপারিশ করিবে,?
জবাবঃ
الحمدلله رب العالمين والصلاة والسلام على سيدنا محمد رسوله الكريم
...
রাসুলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর লোক সুপারিশ করবে।
(১) নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম ।
(২) উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম।
(৩) শহীদ গন।
[তথ্যসূত্রঃ- সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ, মিশকাত শরীফঃ ৫৩৭০]
শাফায়াতের সমগ্র ব্যাপারটি আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে থাকবেঃ
*****************************************************
পবিত্র কোরআনে সূরা যুমার-এর ৪৪ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-
আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
(হে রাসূল) বলে দিন, শাফায়াতের সমগ্র ব্যাপারটি আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে। (সূরা যুমার)
মহান আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ কারো জন্য শাফায়াত করতে পারবে না। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
তাঁর অনুমতি ব্যতিত কে তাঁর নিকট শাফায়াত করবে? (সূরা বাক্কারাহ-২৫৫)
যে ব্যক্তির প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ অন্য কাউকে শাফায়াত করার অনুমতি প্রদান করবেন, সে ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি নিজ ইচ্ছে মতো শাফায়াত করা দূরে থাক- আল্লাহর সামনে মুখ খুলতেই পারবে না। মহান আল্লাহ বলেন-
আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
যাদের উপর আল্লাহ খুশী হয়েছেন তারা ব্যতিত আর কারো জন্যে শাফায়াত করা যাবে না। (সূরা আম্বিয়া-২৮)
সুপারিশকারী যা সুপারিশ করবে তা হবে সকল বিচারে সত্য ও ন্যায় সঙ্গত। সূরা আন্ নাবা-এর ৩৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে-
আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
করুণাময় আল্লাহ রব্বুল আলামীন যাদেরকে অনুমতি দিবেন তারা ব্যতিত আর কেউ কোন কথা বলতে পারবেনা এবং তারা যা কিছু বলবে তা ঠিক ঠিক বলবে। (সূরা নাবা)
যারা সুপারিশ করার অনুমতি লাভ করবে তারা নির্দিষ্ট শর্ত অর্থাৎ সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে একটা সীমারেখার ভেতরে সুপারিশ করবে। আর এই সুপারিশের ধরণ সাধারণ কোন সুপারিশের মতো হবে না। আল্লাহর নিকট সুপারিশের ধরনও হবে ইবাদত ও বন্দেগীর ন্যায়। মানুষ আল্লাহর কাছে যে পদ্ধতিতে নিজের পাপের ক্ষমা চায় অর্থাৎ কান্নাকাটি, অনুনয়-বিনয় এবং অত্যন্ত দীনহীন ভঙ্গিতে-তেমনি ভঙ্গিতে শাফায়াতকারী শাফায়াত করবে। তবে শাফায়াতের এই ধরণ আল্লাহর রাসূলের জন্য প্রজোয্য নয়। কারণ তার মর্যাদা আল্লাহর নিকট সবেচেয়ে বেশী। তিনি কি ভঙ্গীতে আল্লাহর দরবারে উম্মতের জন্য শাফায়াত করবেন সেটা আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় বন্ধু বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মধ্যেকার ব্যাপার। যিনি সুপারিশ করবেন তার মনে কখনো এ ধারণা জন্মাবেনা যে, তাঁর সুপারিশের কারণে আল্লাহ তার নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। পরম মেহেরবান আল্লাহর অনুগ্রহসূচক অনুমতি পাবার পরে সুপারিশকারী অত্যন্ত দীনতা, হীনতা ও বিনয় সহকারে অনুনয় করে বলবে, ‘হে দুনিয়া ও আখিয়াতের মহান মালিক আল্লাহ! তুমি তোমার অমুক বান্দাহর গুনাহ ও ভুল ক্রুটি-বিচূতি ক্ষমা করে দাও। তাকে তোমার অনুগ্রহ ও রহমত দান করে ধন্য করো।’
সুতরাং সুপারিশ করার অনুমতিদানকারী যেমন আল্লাহ তেমনি তা কবুলকারীও আল্লাহ। মহান আল্লাহ বলেন-
আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
তিনি (আল্লাহ) ব্যতীত তাদের জন্যে না আর কেউ ওলী বা অভিভাবক আছে, আর না কেউ শাফায়াতকারী। (সূরা আনয়াম-৫১)
শাফায়াতকারী তারাই হবেন যারা আল্লাহর অতি প্রিয়। আর যাদের জন্যে শাফায়াত করা হবে তাদের পাপের অবস্থা এই যে, পাপ ও নেকীর ক্ষেত্রে তাদের পাপ সামান্য বেশী। অর্থাৎ ক্ষমা পেয়েও যেন ক্ষমা না পাওয়ার অবস্থা, ক্ষমার যোগ্যতা লাভে সামান্য অভাব। এই অভাবটুকু পুরণের জন্যেই মহান মালিক আল্লাহর রাব্বুল আলামীন অনুগ্রহ করে তাদের জন্যে শাফায়াত করার অনুমতি দান করবেন। সুতরাং একথা অত্যন্ত পরিষ্কার যে, কারো ইচ্ছে অনুযায়ী কেউ কারো পক্ষে সুপারিশ করতে পারবে না। যাদের জন্য সুপারিশ করা হবে তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে ক্ষমা করে দেয়ার উদ্দেশ্যেই কাউকে সুপারিশ করার অনুমতি প্রদান করবেন। এখানে একটা প্রশ্ন জাগে, সুপারিশ করার অনুমতিদান করবেন আল্লাহ, আবার তা কবুলও করবেন তিনি। তাহলে সুপারিশকারী নিয়োগ করার যুক্তিটা কী? এর জবাব অত্যন্ত স্পষ্ট। কিয়ামতের ময়দানে সেই মুসিবতের দিনে, যে মুসবিতের মহাবিভিষীকা দেখে সাধারণ মানুষের অবস্থা যে কি হবে তা কল্পনারও বাইরে-স্বয়ং কোন কোন নবীগণও ভয়ে কাঁপতে থাকবেন এবং আল্লাহর সামনে কোন কথা বলার সাহস পাবেন না। সেই অবস্থায় আল্লাহ তার কিছু প্রিয় বান্দাহদেরকে শাফায়াত করার অনুমতি প্রদান করে তাদের মর্যাদা আরো বৃদ্ধি করবেন। এই মর্যাদার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্থান পাবার অধিকারী হবেন বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
তবে এ কথাও সত্য-মানুষ আল্লাহর বিধান মেনে চললেই যে, সে কিয়ামতের ময়দানে জান্নাত পাবে এ ধারণা করা উচিত নয়। বরং মনের আকাংখা এটাই হওয়া উচিত, ‘জান্নাতের লোভ নেই জাহান্নামেরও ভয় নেই-চাই শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি।’ সুতরাং, আল্লাহর রহমত ছাড়া মুক্তি পাওয়া যাবে না। সূরা নাবা-এর ৩৮ নং আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
আরবী,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
সেদিন সকল আত্মা ও ফেরেশতাগণ কাতার বন্দী হয়ে দাঁড়াবে কেউ কোন কথা বলবেনা সে ব্যতীত, যাকে পরম করুণাময় অনুমতি দিবেন। এবং যথাযথ ও সঠিক কথা সে বলবে। (সূরা নাবা)
উপরোক্ত কোরআন ও হাদিসের আয়াতের বিশ্লেষণে এটাই প্রতিয়মান হয় যে বিচার দিবসে মহান বিচারক আল্লাহ্ সেদিন যাকে অনুমতি দিবেন শুধুমাত্র তিনিই সুপারিশ করতে পারবেন।
আশাকরি বুঝতে পেরেছেন কোরআন ও হাদিসে এনিয়ে কোন সাংঘর্ষিক কিছু বলা হয়নি।
যারা ইসলাম সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন উপস্থাপন করেন এবং ইসলামকে বিশুদ্ধভাবে জানতে চান তাদের জন্য আমাদের এই উপহার ।
Visitors
Tuesday, 27 August 2019
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
তথ্য সত্য মুক্তি প্রগতি
তথ্য সত্য মুক্তি প্রগতি কুরআনে বিস্ময়!যে বিস্ময় ভাবনাতে ও আসেনা। ★ আজ দেখব,সূরা আসহাবে কাহফ হতে, সূরা,আয়াত,ঘটনা বর্ণনা,বর্ণিত শব্দের...
-
Mercy Killing লেখকঃ তানভীর আহমেদ মস্তিষ্কের নিচে গলার পিছন দিকটায় থাকে Spinal Cord যা বাংলায় সুষুম্না কান্ড হিসেবে পরিচিত। আর পুরো শরীরে...
-
কুরআন কি মানুষের পক্ষে লেখা সম্ভব ? মানুষের যে জিনিসটি আল্লাহ নিজের জন্য সৃষ্টি করেছেন ।” €€ ***************************************...
-
নক্ষত্রটির নাম Sirius। বাংলায় লুব্ধক তারা। রাতের আকাশে এই তারাটাকে দেখতে সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখায়! খালি চোখে দেখা না গেলেও এটা মূলত দুইটা তারার ...

No comments:
Post a Comment
Note: only a member of this blog may post a comment.